পৃষ্ঠাসমূহ

বিসর্গ

বিসর্গ
আবুল কাসেম তারা (20-03-17)
------------------
আমার বয়সটা যখন ক্রমে পঁয়ত্রিশ পেরিয়ে গেছে
পথচলা অবধি বঙ্গের গন্ডি সীমার ভেতরেই রয়েছে।
আশ্চর্যের কিছুই নেই, তখন পর্যন্ত এই আমি
পৃথিবীর পঁয়ত্রিশশত বছরের ঘটনার কথাও জানি!
অথচ কি আশ্চর্য লাগে! সহসাই আমি চমকিত হই
চৌত্রিশ বছর আগের কথা আমার কিঞ্চিত জানা নেই।

এইতো ভারত সাগরের তলদেশে ঘুমিয়ে আছে
মানব জাতি, বর্ণচোরা মাটিতে বর্ণের কাছাকাছি।
কৃষ্ণের গড়া সোনায় মোড়ানো দৃষ্টিকাড়া স্বপ্নপূরী,
আছে পঁয়ত্রিশশত বছরের সুসজ্জিত দ্বারকা নগরী।
তরঙ্গের মহড়ায় জলষ্পতি আজো দিয়ে যাচ্ছে পাহারা
দ্বারকার সিংহদ্বার এখনো আমার জন্য রয়েছে খোলা।

যমুনার স্রোতে মন ভাসিয়ে দিয়ে তাজমহলটা ঘুরেছি
তোমার শেষ কোথায়? গোমতিকে আমি প্রশ্ন করেছি।
গোমতি পঁয়ত্রিশশত বছর পূর্বে নিয়ে গেল আমাকে,
সহস্র অতীতের দৃষ্টি আমার ফিরে চলা পথের দিকে।
রক্তের রঙ বদলায়নি, চক্ষুগুলো সব আপনই আছে,
কষ্ট লাগে! কেন মানুষ থেকে মানুষ ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে?

হাঁটতে থাকি পৃথিবীর আরো অনেক পেছনের পথে
সিংহল থেকে আরাফাতে, আদমের আসল ভিটেয়।
একদিন যেখানে আমার অস্তিত্বই সংরক্ষিত ছিল
আমি যেখানে দাঁড়িয়ে, যারা ছিল, তারা কোথায় গেল?
ঘটনার দশ হাজার বছরের অধিক অতীত পেরিয়ে
ফিরে আসি ইব্রাহিমের ঠিকানায় মরুর উন্মুক্ত আলয়ে।

মুহাম্মাদের আলোর ফোয়ারায় শান্তির অবগাহণ করি
অথচ রক্তের রঙ বদলায়নি, তুমি আমি সব আমরাই!
চার দিকে আপনার গন্ধ নিয়ে তাকাই আপন অক্ষে
দেখি মানব প্রেমী বিধাতাকে, গোত্র বর্ণ ধর্মের অন্তরালে।
যখন বিধাতাকে দেখি জাতি ভেদে সর্বময় সৃষ্টির মস্তকে
বিসর্গ হয়ে যায় সব ব্যবধান, সবকিছু শুধু তাঁরই থাকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন