পৃষ্ঠাসমূহ

চিত্রা হরিণী

চিত্রা হরিণী
আবুল কাসেম তারা
-----------------------
আমি যখন শিঁষ দিয়ে ডাকি-
জানবে, অনেক কিছুই রাখিনি বাকি।
তোমার পূর্ব দিকের জানালাটা খুলতেই
আমি পশ্চিমে তাকাই, শুধু কাঁটাতারের একটু বাঁধা!
সমীরণে ভেসে আসা মিষ্টি হাসি আমায় জড়িয়ে ধরে,
ও মেয়ে সনাতন- তোমার লঙ্কা গুঁড়োতে চোখ জ্বালা করে!
কিন্তু হাসিটা নিভৃতে পাগল করে দেয়!
চুম্বকের আকর্ষণে নড়ায়-
আমার চমকিত হৃদয়!

জানি সূয্যিটা আমার বাড়ির উঠোন দিয়ে যায়,
একটি চিরকুট লিখছি বিকেলের বুকে, পড়ে নিও।
পূবের সূয্যিটা দিন শেষে তোমার বাড়িতে লুটোয়,
আঁধার রাতের স্তদ্ধতায় পারো যদি উত্তর লিখো,
আগ্রার জলে ডুব দিয়ে যমুনাকে স্বাক্ষী রেখো,
প্রাতের সূয্যি থেকে বুঝে নেব প্রাণের লেখা।
খুলে রাখা পশ্চিমের জানালাটা-
বলে দেবে তোমার বার্তা।

তুমি কি জানো?
আমি যখন তৃষ্ণায় জল চেয়ে ডাকি-
রূপসী পদ্মা গুমড়ে গুমড়ে কাঁদে!
তিস্তা, মাতামুহুরী, চিত্রা, শীলা-সুতিয়া,
সাতশত জলপরী তৃষ্ণায় ছটফট করে কাঁদে!
কেন জানো? তোমার ফারাক্কা ওদের গলাটিপে মেরেছে!
একদিন ওরাই আমাকে খাঁটি মিষ্টিদুগ্ধ পান করিয়েছে,
আজ ওদের মৃত আত্মার চিৎকারে আমার কষ্ট লাগে!
অথচ তোমাকেও ভালো লাগে!

পশ্চিমের চপলা চিত্রা হরিণী,
তোমাকে দেখে বার বার হই হৃদয়গ্রাহী!
আমি যখন তোমাকে শিঁষ দিয়ে ডাকি-
জানবে, অনেক কিছুই রাখিনি বাকি।
পূবের বঙ্গ রমনীর আঁচল জুড়ে শুভ্র মল্লিকা,
তরল আয়নাতে পদ্ম পাতার বিছানায় শুয়ে স্বপ্ন বুনি,
তোমার পশ্চিমের কণ্ঠস্বর পূর্বস্থ জানালা খুলে শুনি।
বৈষম্য ছিঁড়েফেলো, প্রাচীর ভেঙে দাও!
একক বর্ণের বলয় গড়, হৃদে হৃদয় মেলাও।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন