পৃষ্ঠাসমূহ

চাঁদকে দেখা হল না

চাঁদকে দেখা হলো না
আবুল কাসেম তারা
------------------
কুহেলিকা! এখনি যেতে হবে
এই নিমগ্ন অন্ধকারে।
না যেও না! যেও না তুমি!
বডড ভয় করে আমার!
খুব ভয় করে! তোমাকে হারাবার ভয়
তুমি বুঝবে না।
তুমি যেও না কিন্তু, তবে অবশিষ্ট ঘুম
কভূ আসবে না!

কুহেলিকা! এখনি যেতে হবে,
লক্ষ্মীটি যেতে দাও!
রাত্রির গায়ে চাঁদের মলিন মুখটি কি
দেখতে পাও?
চাঁদকে স্বাক্ষী রেখে বলছি আমি
ফিরবই, ভেবো না।
তোমার কাছে রেখে গেলাম স্বীয়
আগন্তুক শিশুর কান্না।

বুলেটের গর্জন শোনা যায়!
কুহেলিকা! আমি যাচ্ছি!
পথের সীমানা পেরিয়ে যায় মুক্তির
অবিকৃত আরক্ষী।
পথে পতিত সারিবদ্ধ বিক্ষত লাশ
শেয়াল শকুনেরা ঘাঁটছে!
অকৃতজ্ঞ রাজাকার হানাদারদের
পথ দেখিয়ে যাচ্ছে!

রক্তাক্ত মার্চ গড়িয়ে ঊনিশশ একাত্তর
প্রায় পূর্ণ হচ্ছে,
অনিদ্রিত আনাহারী যোদ্ধারা সম্মুখে
তীব্রবেগে লড়ছে।
ডোবা নালা সমতল থেকে জলে
তরঙ্গে লাশের মিছিল,
বাতাসে রক্তের গন্ধ আঁচল জুড়ে
আর্তনাদ করছে ভিড়।

ঝাঁঝরা গুলিতে বুক ছিদ্র হয়ে গেল
কুহেলিকা, যাচ্ছি!
চাঁদকে দেখা হল না,বলো ওকে- আমি
বডড ভালবাসি।
বুকের আঙিনার সবুজ পাতায়
ভালোবাসার চিঠি লিখলাম,
কুহেলিকা! চোখের শেষ জলটুকু
তোমার জন্য রেখে গেলাম।

যখন বুক ফাঁটা চিৎকারে অস্থির
চারদিকে খুঁজবে আমায়
চাঁদ জানতে চেয়ে বলবে, মাগো
বাবা গেছে কোথায়?
কুহেলিকা! পূর্বদিকের সবুজ সমতলে
নিয়ে এসো ততবার-
আমি এখানেই হাত বাড়িয়ে রেখেছি
দেখবে একটি মিনার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন