পৃষ্ঠাসমূহ

সাদা ফুল

সাদা ফুল
আবুল কাসেম তারা
----------------------
যাকে ভালোবাসতে চাই, সে হয়ে যায় দারুণ কৃপণ,
তার সাথে হয় মন দেয়া নেয়া, হয় মনের মিলন।
এইতো সেদিন এই বৃক্ষটিকে ভালোবসেছিলাম,
ফুলে ফলে হেসেছিল বৃক্ষটি, বিস্ময়ে দেখেছিলাম।
প্রতিদিন তার থেকে পেয়েছি মিষ্টি সুস্বাদু ফল,
হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে দেখি বৃক্ষটি নীরব, অচল।
তাজা পাতা গুলো ঝরে গেছে, ফল গুলো মলিন,
দারুণ কষ্ট হল! বৃক্ষটি মৃত্তিকায় হয়েগেল বিলীন!

এইতো সেদিন পাখির ছোট্ট ছানাটিকে পুষেছি,
হাত বাড়াতেই সে হাতের পাতায় এসে বসেছে।
মাথায় হাত বুলোতেই ঠোঁট নেড়ে কিছু বলতো,
দারুণ চক্ষু দু’টো চোখে কেমন যে চেয়ে থাকতো!
একটু একটু করে উড়তে শেখা পাখিটি এবার-
যেথায় যতো দূর যাই, সে যে সঙ্গী হতো আমার।
হাঠাৎ ঘুম থেকে উঠে দেখি জীর্ণ দেহটি তার!
চরম কষ্ট হল! পাখিটি কখনোই ডাকবে না আর!

এইতো সেদিন গলা জড়িয়ে শুয়েছিলেম দুই ভাই,
দাদা দাদা বলে সে পিছু পিছু ডাকতো আমায়।
কোনদিন জ্বর হলে, জড়ো চোখে থাকতো চেয়ে!
ভাইয়ে ভাইয়ে এতো প্রেম, দুঃখরা ছোটত ধেয়ে।
একটু একটু করে ভাইটি আমার সত্যিই বড় হল,
এমন দারুণ ভাইটি আমার হৃদয়টি কেড়ে নিল।
হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি, ভাই বলে ডাকছেনা আর,
কষ্ট রে কষ্ট! ভাই ডাক কোনদিন শোনবনা তার।

এইতো সেদিন বন্ধুর বাড়ি খেলেম দুপুরের ভাত,
বন্ধুর মা, সে যে মায়ের মতই টেনে নেন হাত।
প্রায় দিন বন্ধুকে বলতেন, তোর বন্ধুকে নিয়ে আয়,
বাবা বলে ডাকতেন তিনি, ঠিক মায়ের বায়নায়।
একদিন বহু দূরে চলে আসি, চলে কর্ম জীবন,
দূর থেকে বুঝেছি তাঁরে সে ছিল কতনা আপন!
সেদিন ঘুম থেকে উঠে শুনি বন্ধুর করুণ কান্না!
বাবা বলে ডাকবেনা কভূ, বয়ে গেল চোখের বন্যা।

কেন তিনি দেন তিনি নেন, যেন বুঝিনা তাঁরে!
এমন মায়ার বাঁধন ছিড়ে যায় তারা কোন পাড়ে?
কেন এতো অভিমানী তারা, এক বারও ফেরে না!
কেন বার বার দেখি, যেন এক বারও দেখি না!
আয় ফিরে আয়, মেঘ পেরিয়ে আয়, আপন আলায়,
ওখানে আগন্তুকরা এক দিন সাদা ফুল হয়ে যায়!!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন