পৃষ্ঠাসমূহ

তোদের অভিশাপ দিচ্ছি

তোদের অভিশাপ দিচ্ছি
আবুল কাসেম তারা
-------------------------------
ঊনিশ’শ একাত্তর মাতৃকায় অমানিশার কালো ছাঁয়া।
দৃশ্যমান রক্তাক্ত অবয়ব টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া।
নবজাতকের মায়া চিৎকারে সেদিন কঠিন সতর্ক মা,
কোল থেকে জলে ফেলে দেয় তবু কাঁদতে পারে না।
হায়েনার পথ অতিক্রম হতেই ছুঁটে যায় প্রিয় কান্ডারী,
জল থেকে বুকে তুলে নিয়ে কিযে বুকফাঁটা আহাজারি!


চার দিকে কলরব ঝঙ্কার হুঙ্কার বুলেটের তর্জন গর্জন।
হানাদার নির্মম সেদিন কেড়ে নেয় বোনটির সম্ভ্রম।
আশপাশে ছড়িয়ে রাজাকার পিশাচের অসীম তান্ডব,
দেশ প্রেমিকের ভিটে-মাটি পথ ঘাট কেড়ে নেয় সব।
মার্চ হতে অবিরাম স্রোতোবহ লাশ তরঙ্গে ভাসছে,
দু’শ ত্রিশটি নদ-নদী লাশ গুলো বুকে নিয়ে কাঁপছে।

ঊনত্রিশ নভেম্বর ঊনিশ’শ একাত্তরে ফতুল্লা বক্তাবলী,
লাশের মিছিল বুকে নিয়ে ছুঁটছে বুড়িগঙ্গা ধলেশ্বরী।
অনলে ছাড়খার বক্তাবলী, আলীরটেক থেকে বাংলার গ্রাম,
চোখ বেঁধে ওরা নিরস্ত্র মানুষের কেঁড়ে নেয় তাঁজা প্রাণ।
নির্মম হানাদার বুকের পৃষ্ঠে চড়ে হর্ষনাদে নাচছে,
রাজাকার হারামি দাঁত বের করে অট্ট হাসি হাসছে।

মায়ের কসম! তোদের প্রতি চির অভিশাপ দিচ্ছি!
তোরা মরবি! শ্বাসরুদ্ধ ফেনা মুখে মৃত্যুর গন্ধ পাচ্ছি।
আসছে যোদ্ধা! ক্ষুধার্ত যোদ্ধার বুকে অমৃত প্রাণ,
শানিত যোদ্ধার বিথর জ্বালা চেতনায় বিদ্রোহী গান।
ত্রিশ লক্ষ প্রাণের মূল্যে বিজয় অর্জিয়ে ক্লান্ত যোদ্ধা,
বিজয় এনেছি মাগো উল্লাসে যোদ্ধার বিনম্র শ্রদ্ধা।

গন্তব্যে ফিরে কঙ্কালের মুখ থেকে শোনে বাবা ডাক,
নেই পিতা-মাতা, বঁধু, শিশু-কন্যা সহ সব ফাঁক।
হঁহুঁ চিৎকার! যোদ্ধার বুকের পাঁজর ফাঁটা হাহাকার,
ক্লান্ত অবস পাথর মূর্তিতে কঙ্কালের সাথে একাকার।
সর্বহারা যোদ্ধার বুকে রক্তক্ষরণ, আছে নিদারুণ শূণ্যতা,
তবুও যোদ্ধা সকল সন্তানের জন্য রেখে গেল স্বাধীনতা।

সেই স্বাধীন দেশ পঁয়তাল্লিশের পথে স্বাধীনতা তুমি কই?
তাকি বিচারহীন হত্যা, অধিকার কেড়ে নেয়া,গদির লড়াই?
স্বাধীনতা তুমি কাকের মাথায় ব্যাবসার মুকুট পড়িয়ে দিলে,
যাদের কেড়ে নিলে তাঁদের প্রত্যাশার একটুও কি সাধ দিলে?
মায়ের কসম! বাকরূদ্ধকারী শকুন! তোদের অভিশাপ দিচ্ছি!
তোরা মরবি! শ্বাসরুদ্ধ ফেনা মুখে তোদের মৃত্যুর গন্ধ পাচ্ছি।
অভিশাপ দিচ্ছি

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন