পৃষ্ঠাসমূহ

সোনালী কাফন

সোনালী কাফন
আবুল কাসেম তারা
===============
বিংশ শতাব্দীর বুকে জ্বালাময় খাঁ খাঁ অসহ্য দহন!
বুক ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায় চলে শকুনের অবাধ বিচরণ।
নীল চাষের ভৃত্য বানিয়ে তারা চাবুক মেরেছে শত,
আপন ভিটেয় পরাধীনতার জ্বালা পাথর ঘাতের মত।
এখনো পৃষ্ঠে লেগে আছে চাবুক বিদ্ধ ক্ষত সহস্র দাগ,
বুকের জমিতে দাঁড়িয়ে ওরা নিয়েছে জমিদারির স্বাদ।

এ দুঃখ বলবো কাকে! কে দেখবে এই বুকের দহন!
তিতুমীর বাঁচতে পারেনি কেল্লাতে তার বিনাশ জীবন।
সূর্যসেন, শেরেবাংলা, হাজী শরীয়তুল্লাহ, যতীন্দ্রনাথ,
মাওলানা ভাসানী, মাওলানা রশীদের তুখোড় প্রতিরোধ।
তখনই হঠাৎ বিদ্রোহীর জন্মে হাসছে বঙ্গের আলো ছাঁয়া,
বিদ্রোহীর নাম বঙ্গময় ছড়িয়ে প্রকাশিত হলো দু‍খু মিয়া।
দুঃখের অবগুণ্ঠন পেড়িয়ে বিষ্ফোরিত এক বিদ্রোহী ফুল,
বঙ্গের বীরকণ্ঠ সেনা দু‍খু মিয়া থেকে বিদ্রোহী নজরুল।

দুর্গম গিরি মরু সমুদ্র পথ তুচ্ছ করি জাগো হে যুবক!
কারায় লাথি মেরে ভেঙে তালা চালাও বিদ্রোহী চাবুক।
চারদিকে মাটির অধিকার আদায়ে যোদ্ধার সমাগম,
ব্রিটিশ শকুনদের করতে হবে বিতারিত রক্তের কসম!
স্বাধীনতা এলো, যত দূর এলো, স্বাধীনতা হলনা আপন!
সহস্র শহীদের গায়ে জড়াতে হয়েছে সোনালী কাফন!

বাংলা হলনা, পেলাম পাকিস্তান, এ দুঃখ বলবো কাকে!
ওরা কাঁধে পা রেখে বুলেট মারে বাংলা ভাষার বুকে!
আমিতো মা বলে ডাকি মা ডাকছে আমাকে সোনা,
মায়ের ভাষা রবে, প্রাণ যাবে, তবু স্তব্ধ করা যাবে না।
সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ বিদ্রোহী ভাষা বীর,
একুশের বুকে প্রাণ দান করে গড়ে গেল ভাষার নীড়।
স্বাধীনতা এলো, যত দূর এলো, স্বাধীনতা হলনা আপন!
সহস্র শহীদের গায়ে জড়াতে হয়েছে সোনালী কাফন!

এর পর শোনা গেল স্বাধীনতার ডাক, বীরের বজ্রকণ্ঠ,
সোহরাওয়ার্দীর স্নেহধন্য মুজিবকণ্ঠ যেন মুক্তির অগ্নিমন্ত্র!
দাঁড়িয়ে একাত্তর কালো মার্চ কান্ডারী হল কারারুদ্ধ!
যুদ্ধ চলবে দাঁড়িয়েছে যুবরাজ শোনা গেল তাঁর শব্দ!
চারদিকে রক্ত প্রবাহ পাক শকুনেরা করে দিচ্ছে স্তব্ধ।
জেডফোর্সের মহাবীর জিয়াউর মুজিব মুক্তিতে লড়ছে,
বিদীর্ণ রক্তের বিছানায় শাশ্বত স্বাধীনতার বিজয় ঘটছে।
স্বাধীনতা এলো, যত দূর এলো, স্বাধীনতা হলনা আপন!
সহস্র শহীদের গায়ে জড়াতে হয়েছে সোনালী কাফন!


সোনালী কাফন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন